গরমে নিজেকে সুস্থ রাখা এবং রোগ প্রতিরোধ করার কিছু টিপস
গরমে নিজেকে সুস্থ রাখতে সব সময় নিজের শরীরকে হাইড্রেটেড রাখুন। নিজের শরীরকে সুস্থ রাখার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন। পাশাপাশি পানীয় হিসেবে বেছে নিতে পারেন আমের শরবত, ছাতু শরব্ বেলের শরবত ও ডাবের জল। প্রচণ্ড গরমে অনেকেই হিট স্ট্রোক করে।
তীব্র গরমের যেসব খাবারগুলো খাওয়া যাবেনা
গরমে নিজেকে সুস্থ রাখতে অতিরিক্ত চা বা কফি পান করা উচিত নয়। চা বা কফিতে অতিরিক্ত ক্যাফেইন থাকে যা দেহকে পানিশূন্য করে ফেলে এবং শরীরে অতিরিক্ত তাপমাত্রা বাড়িয়ে তোলে। গরমের সময় লেবুর শরবত পান করলে তার শরীরের ক্লান্তি দূর করে। সেক্ষেত্রে সাধারণ পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে পান করা যেতে পারে।
অতিরিক্ত চিনিযুক্ত শরবত বা রাস্তার পাশের রঙিন শরবত এড়িয়ে চলুন এতে সমস্যা বাড়বে। সকালে ঘুম থেকে উঠেই আইসক্রিম খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। মাংস, পোলাও, বিরিয়ানি এ জাতীয় খাবার এই গরমে পরিহার করুন। ঘি দিয়ে তৈরি খাবারগুলো পরিহার করুন বাইরের খাবার না খেয়ে ঘরের তৈরি খাবার খান।
জাঙ্ক ফুড, ফাস্ট ফুড পরিহার করুন এগুলো বদ হজমের জন্য দায়ী। গরমে পানি পান করতে হবে বেশি বেশি কিন্তু কোমল পানীয়, কোল্ড ড্রিংকস খাওয়া যাবেনা । পানি ফলের রস এগুলো হচ্ছে স্বাস্থ্যকর পানীয়। চা কফি শরীরে অতিরিক্ত পানি শূন্যতা করে তাই যতটুকু সম্ভব চিনি দিয়ে দুধ চাপ বা দুধ কফি এই গরমে এড়িয়ে যেতে হবে।
তীব্র গরমের যেসব খাবারগুলো খাওয়া উচিত
গরমে নিজেকে সুস্থ রাখতে প্রতিদিন ৭ থেকে ৮ লিটার পানি পান করুন। এই তীব্র গরমে চিচিঙ্গা, ঝিঙে, চালকুমড়ো সজনেডাঁটা পাতলা ঝোল রান্না করে খেলে শরীরে গরম কম অনুভূতি হবে ও পেট ভালো থাকবে। কাঁচা আমে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে তাই কাঁচা আমের শরবত খেতে পারেন। পাকস্থলী সুস্থ রাখার জন্য টক দইয়ের শরবত প্রতিদিন বানিয়ে খাওয়া যেতে পারে।
এই গরমে শরীরে পানি চাহিদা পূরণ করার জন্য ফলমূল খাওয়া উচিত। স্ট্রবেরি, জাম, শসা ইত্যাদি খাওয়া যেতে পারে। কিন্তু বাংলাদেশের এই সময়ে তরমুজ বাজারে ভরপুর থাকে তাই গরমের ফল হিসেবে তরমুজ খাওয়া যেতে পারে। মসলা জাতীয় খাবার খেতে ভালো লাগলেও এই গরমের সময় কম মসলা জাতীয় খাবারের অপর বেশি জোর দিতে হবে কারণ এগুলো সহজে হজমযোগ্য।
গরমে নিজেকে সুস্থ রাখার জন্য একটি উপকারী সবজি হলো টমেটো। এই টমেটো দিয়ে তৈরি করা যায় নানা ধরনের খাবার। এটি লাইকোপেন সমৃদ্ধ। লাইকোপেন হলো একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা শরীরকে ফ্রি র্যাডিক্যাল ক্ষতির বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে। টমেটোতে প্রচুর পানি থাকে। সেইসঙ্গে থাকে ভিটামিন এ এবং সি। তাই গরমের সময়ে নিয়মিত টমেটো খেতে হবে।
গরমে নিজেকে সুস্থ রাখার ১৬ টি উপাই
- গরমে নিজেকে সুস্থ রাখার জন্য সরাসরি রোদে যাওয়া থেকে বিরত থাকুন
- বেলা ১১ টা থেকে তিনটা পর্যন্ত সরাসরি বাইরে বের হওয়া যাবে না
- সূর্যের আলো থেকে চোখ সুরক্ষার জন্য রোদচশমা ব্যবহার করুন
- সূর্যের আলো যাতে সরাসরি মাথায় না পরতে পারে এজন্য ছাতা টুপি এবং পায়ে স্যান্ডেল ব্যবহার করুন
- কৃষ্ণা না পেলেও প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন
- ডাব জুস লাচ্ছি লেবু পানি দুই প্রবৃত্তি খাবার গুলো বেশি বেশি করে খেতে পারেন
- যেগুলো খাবারে উচ্চ প্রোটিন থাকে সেসব খাবারের পরিবর্তে নিম্ন প্রোটিনযুক্ত খাবার গুলো খেতে পারেন
- কোথাও বের হওয়ার আগে অবশ্যই পানি নিজের সঙ্গে নিবেন
- সুযোগ থাকলে একাধিকবার গোসল করতে পারেন
- ঘুমানোর আগে গোসল করেলে শরীরের তাপমাত্রা অনেকটাই কমে যায়
- হালকা ঢিলেঢালা ও হালকা রঙের শুতি কাপড় পড়বেন
- ঘর যাতে ঠান্ডা থাকে এবং ঘরে যাতে বাতাস প্রবেশ করতে পারে এই মত করে ঘরকে সাজান
- কারো যদি শ্বাসকষ্ট দুর্বলতা ও মাতা ঝিমঝিম করে তবে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন
- বাইরের খাবার থেকে বিরত থাকুন
- গরমে নিজেকে সুস্থ রাখতে প্রচুর পরিমাণে সবজি খান
- শসা টমেটো লাল শাক পাতা এগুলো অবশ্যই আপনার খাদ্য তালিকাতে রাখবেন
শরীরে অতিরিক্ত গরম লাগার কারণ
হার্টের গতি কম বা বেশি হলে কিংবা হার্টে ব্লক থাকলে আপনার শরীরে মাত্রাতিরিক্ত ঘাম হবে।ডায়াবেটিস রোগীদের হঠাৎ ব্লাডসুগার কমে গেলে শরীরে অস্বস্তির সঙ্গে প্রচুর ঘাম ও গরম লাগার অনুভূতি সৃষ্টি হয়।গরমে যারা সরাসরি সূর্যের আলোর নিচে বেশিক্ষণ থাকেন তাদের ত্বক পুড়ে যেতে পারে। এতে ত্বক লাল হয়ে যায়, জ্বালাপোড়া করে, চুলকায় এবং ফোস্কা পড়ে।
মূলত সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মিই এর জন্য দায়ী। যারা একটু ফর্সা বা যাদের ত্বক নাজুক তাদের এই সমস্যা বেশি হয়।গরমের সবচেয়ে মারাত্মক সমস্যা হলো হিটস্ট্রোক। শুরুতে হিট স্ট্রোকের পূর্বে হিট ক্যাম্পে দেখা দেয় যাতে শরীরে ব্যথা করে, দুর্বল লাগে এবং প্রচণ্ড পিপাসা লাগে। পরে হিট এক্সহসশানে দেখা দেয়, শ্বাস-প্রশ্বাস দ্রুত হয়, মাথাব্যথা করে এবং রোগী অসংলগ্ন আচরণ করতে থাকে।
এ অবস্থায় দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া না হলে শরীরের তাপ নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায় এবং শরীরের তাপমাত্রা ১০৫ ডিগ্রি ফা. ছাড়িয়ে যায়। একে হিট স্ট্রোক বলে। এর লক্ষণসমূহ হলো- তাপমাত্রা দ্রুত ১০৫ ডিগ্রি ফা. ছাড়িয়ে যায়, ঘাম বন্ধ হয়ে যায় ও ত্বক শুষ্ক ও লাল হয়ে যায়, নিঃশ্বাস দ্রুত হয়, নাড়ির স্পন্দন ক্ষীণ ও দ্রুত হয়, রক্তচাপ কমে যায়, খিঁচুনি হয়, মাথা ঝিম ঝিম করে এবং রোগী অসংলগ্ন ব্যবহার করতে থাকে।
রোগীর প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যায়, অজ্ঞান হয়ে যায়, এমনকি শকেও চলে যেতে পারে।গরমের সরাসরি প্রভাব ছাড়াও অন্য আনুষঙ্গিক সমস্যা হতে পারে। অনেকেই গরমে তৃষ্ণা মেটাতে বাইরে পানি বা শরবত খান, যা অনেক সময় বিশুদ্ধ হয় না। ফলে ডায়রিয়া ও বমিতে আক্রান্ত হতে পারেন। একই কারণে এ সময় পানিবাহিত অন্যান্য রোগ যেমন টাইফয়েড, হেপাটাইটিস ইত্যাদি বেশি হয়।
গরমে অনেকে প্রচুর পানি পান করেন কিন্তু তাতে পর্যাপ্ত লবণ থাকে না, ফলে লবনের অভাব দেখা দেয়। গরমে অনেক সময় খাবার নষ্ট হয়ে যেতে পারে। ওই খাবার খেলে বদহজমসহ অনেকের পেটের পীড়া দেখা দিতে পারে।
প্রচণ্ড গরমে সুস্থ থাকতে করণীয়
বেশ কয়েকদিন ধরে প্রচণ্ড গরম পড়ছে। গরমের তীব্রতা বাড়ায় সবারই কাহিল অবস্থা। অনেকে সারা দিনের কর্মব্যস্ততায় ঘেমেই যেন প্রতিদিন গোসল করছেন। অতিরিক্ত তাপমাত্রায় এ সময় মাথা ব্যথা, বমিভাব, শরীরে অস্বস্তি, ডায়রিয়া, অ্যালার্জি ও হিট স্ট্রোকের মতো রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
এমন অবস্থায় কোথাও বেরোনো তো দূরের কথা, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘর ছাড়া বাড়ির ভেতরেও টেকা দায় হয়ে উঠেছে। এ অসহনীয় গরমে শরীর খারাপ হতেই পারে। তাই কীভাবে গরমে নিজেকে সুরক্ষিত রাখবেন তা নিয়ে বিস্তারিত তথ্য থাকছে আজকের আয়োজনে।
আমার মতামত
বাইরের যেসব খাবার আছে সেইগুলো খাবার কে আমরা এড়িয়ে চলার চেষ্টা করব। বেশি বেশি করে পানি পান করবো। ডাবের পানি লেবুর শরবত এই খাবারগুলো বেশি বেশি করে খাব। এমনকি আমাদের প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় আমরা শাকসবজিটাকে বেশি প্রাধান্য দিব। বেশি মাংস জাতীয় খাবার ফাস্টফুড কাচ্চি মসলা জাতীয় খাবার থেকে আমরা সবাই বিরত থাকবো।
প্রিয় পাঠক আমার পোস্টে যদি আপনার ভালো লাগে অবশ্যই আমাকে আপনার একটি সুন্দর কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন। গরমে নিজেকে সুস্থ রাখা এবং রোগ প্রতিরোধ করার উদ্দেশ্যে আমি যদি কিছু বলতে চাই তাহলে সব কথার এক কথা হচ্ছে যে গরমে আমরা এমন ভাবে চলব যাতে আমাদের শরীরে বেশি গরমও না লাগে আবার বেশি ঠান্ডাও না লাগে।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url