সোনালী ব্যাংকে একাউন্ট খোলার নিয়ম জেনে নিন ২০২৪

সোনালী ব্যাংকে লোন নেওয়ার নিয়ম

সোনালী ব্যাংকে একাউন্ট খোলার নিয়ম এ বিষয়টি আমরা মৌখিকভাবে আলোচনা করে থাকি যে আমাদের একটি সোনালী ব্যাংকে একাউন্ট খোলা উচিত। কিন্তু আমরা অনেকেই জানি না কিভাবে এবং সোনালী ব্যাংকে একাউন্ট খুলতে কি কি কাগজ জমা দিতে হয়। সোনালী ব্যাংকে একাউন্ট খুলতে কত টাকা লাগে। সোনালী ব্যাংক বাংলাদেশের একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় ব্যাংক।

এই পোস্টে আমি আপনাদের সাথে সোনালী ব্যাংকে একাউন্ট খোলার নিয়ম এবং পদক্ষেপ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। সোনালী ব্যাংকে একাউন্টের প্রকারভেদ, সোনালী ব্যাংকে একাউন্ট খোলার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, অনলাইনে সোনালী ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম এবং সোনালী ব্যাংকের অ্যাকাউন্টের সুবিধা গুলো কি কি এর সকল বিস্তারিত আলোচনা করব। এজন্য আপনাদের কাছে একটি অনুরোধ রইল ধৈর্য সহকারে আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়বেন।

সোনালী ব্যাংকে একাউন্ট খোলার নিয়ম এর মধ্যে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের বিষয়টি অতি গুরুত্বপূর্ণ। কেননা যথাযথ কাগজপত্র ছাড়া আপনি সোনালী ব্যাংকে একাউন্ট খুলতে পারবেন না। যেহেতু সোনালী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ গ্রাহকদের দুই ধরনের অ্যাকাউন্ট প্রদান করে থাকে। একাউন্ট গুলো ভিন্ন ধাচের হলেও কাগজপত্র গুলো একই রকমই প্রদান করতে হয়। নিচে কারেন্ট একাউন্ট বা চলতি একাউন্ট এবং সেভিংস একাউন্ট বা সঞ্চয়ী হিসাব এর প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্র গুলো পয়েন্ট আকারে তুলে ধরা হলো।

• আবেদনকারী ব্যক্তির জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি অথবা পাসপোর্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্সের ফটোকপি।
• উক্ত ব্যক্তির দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি।
• বিদ্যুৎ বিল অথবা পানির বিল যে কোন একটি একাধিক কপি।
• নমিনির এক কপি রঙিন ছবি এবং তার জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি অথবা পাসপোর্ট/ ড্রাইভিং লাইসেন্স এর ফটোকপি।
• ব্যবসা সংক্রান্ত একাউন্ট খুলতে চাইলে অবশ্যই ট্রেড লাইসেন্স এর ফটোকপি প্রদান করতে হবে।
• শুধুমাত্র সেভিংস একাউন্ট খোলার জন্য সর্বনিম্ন ১১০০ টাকা জমা দিতে হয়।

উপরে উল্লেখিত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র থাকলে আপনি যে কোন মুহূর্তে সোনালী ব্যাংকের শাখায় গিয়ে আবেদন পত্র পূরণ করে ব্যাংক একাউন্ট খুলতে পারেন। তাছাড়া সোনালী ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

সোনালী ব্যাংকে একাউন্ট সাধারণত দুই ধরনের হয়ে থাকে। একটি হচ্ছে চলিত অ্যাকাউন্ট আরেকটি হচ্ছে সেভিংস একাউন্ট। যেটিকে আমরা সেভিংস একাউন্ট এবং কারেন্ট একাউন্ট হিসেবে জেনে থাকি। সোনালী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ দের সাধারণত এই দুই ধরনের অ্যাকাউন্ট খুলে দিয়ে থাকেন। আপনি আপনার প্রয়োজন অনুসারে অ্যাকাউন্ট বাছাই করে অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন। এবং নিরাপদ ভাবে আপনার লেনদেন সম্পূর্ণ করতে পারবেন। উপরে সোনালী ব্যাংকে একাউন্ট খুলতে প্রয়োজনীয় কাগজ সম্পর্কে আলোচনা দেওয়া হয়েছে।

আমাদের আধুনিক জীবনে ব্যক্তিগত কারণে বা ব্যবসার কারণে অ্যাকাউন্ট খোলা খুব জরুরি হয়ে ওঠে। এখন বর্তমান সময়ে সোনালী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তার গ্রাহকদের জন্য অ্যাকাউন্ট খোলার প্রক্রিয়াটি খুবই সহজ এবং সুবিধা জনক করে রেখেছে। যার কারণে খুব সহজে সোনালী ব্যাংকে একাউন্ট খোলার নিয়ম অনুসরণ করে যে কোন সময় একটি ব্যাংক একাউন্ট খোলা যায়।

সাধারণত দুইভাবে সোনালী ব্যাংকে একাউন্ট খোলা যায়। আপনি সোনালী ব্যাংকের যেকোনো একটি শাখায় আপনার প্রয়োজনে কাগজপত্র নিয়ে উপস্থিত কর্মচারীর সাথে কথা বললে তারা আপনাকে অ্যাকাউন্ট খোলার ফর্ম দিবেন। স্মৃতি সাবধানতার সাথে পূরণ করবেন। একাউন্ট খোলার ফর্ম পূরণ করার পর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সহকারে কর্মচারী নিকট জমা দিতে হবে।

সোনালী ব্যাংকের কর্মচারীরা আপনার তথ্যগুলো যাচাই-বাছাই করবে এবং সবকিছু ঠিক থাকলে কিছুক্ষণের মধ্যেই আপনার একাউন্ট তৈরি হয়ে যাবে। আবার আপনি যদি মনে করেন আপনি সরাসরি ব্যাংকের না গিয়ে একাউন্ট খুলতে চান তাহলে অনলাইনের মাধ্যমে আপনি সোনালী ব্যাংকে একাউন্ট খুলতে পারবেন। এবার জেনে নিই অনলাইনে কিভাবে সোনালী ব্যাংকে একাউন্ট খোলা যায়।

অনলাইনের মাধ্যমে কোনরকম ঝামেলা ছাড়া এখন ঘরে বসেই সোনালী ব্যাংকে একাউন্ট খোলা যায়। যেহেতু আমরা ডিজিটাল যুগে পদার্পণ করেছি তাই সোনালী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ঘরে বসেই অ্যাকাউন্ট খোলার ব্যবস্থা করে রেখেছেন। অনলাইনে সোনালী ব্যাংকে একাউন্ট খোলার জন্য আপনাকে যে পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করতে হবে তা নিচে পয়েন্ট আকারে তুলে ধরা হলো।

1. আপনাকে প্রথমে যেতে হবে আপনার মোবাইলের গুগল প্লে স্টোরে। গুগল প্লে স্টোরে “সোনালী ই-সেবা” নামের অ্যাপটি ডাউনলোড করে ইন্সটল করতে হবে।
2. এরপর অ্যাপটিতে প্রবেশ করার পর ”ব্যাংক একাউন্ট খুলুন “ নামক একটি অপশন পাবেন অপশনটিতে ক্লিক করুন। এই পর্যায়ে আপনি কোন ধরনের অ্যাকাউন্ট খুলতে চাচ্ছেন সেটি সিলেক্ট করতে হবে। তিনটি নির্দিষ্ট অ্যাকাউন্ট থেকে আপনার যেটি প্রয়োজন সেটিতে ক্লিক করুন।
3. এই ধাপে এসে আপনার একটি সচল মোবাইল নম্বর প্রদান করতে হবে এবং কিছুগুন পর সেই নাম্বারে একটি ওটিপি কোড আসবে ওটিপি কোডটি সাবমিট করতে হবে।
4. তারপর আপনার ফেস ভেরিফিকেশন এর জন্য সেলফি তুলতে হবে এবং জন্ম তারিখ সহ জন্ম নিবন্ধন নাম্বার অথবা জাতীয় পরিচয় পত্রের নাম্বার সাবমিট করতে হবে।
5. এই পর্যায়ে এসে আপনার নিজের তথ্য দিতে হবে। সেটি থাকবে একটি ফর্ম আকারে ফর্ম এর ভিতরে আপনার সকল তথ্য একে একে দিতে হবে এবং সাবমিট বাটনে ক্লিক করতে হবে।
6. আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রের দুই পাশের ছবি ক্লিয়ার ভাবে তুলে সাবমিট করতে হবে। এরপর আপনার সাবমিট করা ঠিকানা অনুযায়ী সোনালী ব্যাংকের শাখা গুলোকে দেখানো হবে।
7. সবগুলো শাখার মধ্যে আপনার যে শাখাতে সুবিধা সেই শাখাটি সিলেক্ট করুন এবং ব্যাংক একাউন্টের তথ্য প্রদান করে কাজ শেষ করুন।

আপনার দাওয়াত তথ্যগুলো যদি সঠিক হয় এবং যথাযত হয়ে থাকে তাহলে আপনার প্রধান কৃত মোবাইল নাম্বারে এসএমএসের মাধ্যমে জানানো হবে। মেসেজ টি সেভ করে রাখবেন এবং অনলাইনে সোনালী ব্যাংকে একাউন্ট খোলার নিয়ম অনুসারে তিন মাসের মধ্যে যেকোনো সময়ে সিলেক্ট করা শাখায় গিয়ে অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত যাবত বিষয় সম্পন্ন করে আসতে হবে। অন্যথায় অ্যাকাউন্টটি বাতিল হিসেবে গণ্য হবে।

• একাউন্ট খোলার পরেই পাস বই ও চেক বই পেয়ে যাবেন।
• যেকোনো সময় খুব সহজে এক শাখা থেকে অন্য শাখা তে শিফট হওয়া যায়।
• চেক বই, এটিএম কার্ড এবং অনলাইন ব্যাংকিং এর মাধ্যমে যেকোনো সময় টাকা উত্তোলন বা লেনদেন করা যায়।
• শুধুমাত্র একাউন্টে এক হাজার টাকা জমা রাখলে একাউন্ট সচল থাকবে।
• একাউন্ট তৈরি করতে কোনরকম হিডেন চার্জ নেই। একাউন্ট খোলার সময় যত টাকা দিতে হয় সেটি একাউন্ট এ যুক্ত হয়ে যায়।
• একটি চেক বই দেওয়া হয়।

উপরের দেওয়া তথ্য গুলো সোনালী ব্যাংকের একাউন্ট খোলার নিয়মের বিষয়ে আপনার উপকারে আসবে। এছাড়া প্রিয় পাঠক মনে রাখবেন, উপরের দেওয়া তথ্য গুলো সোনালী ব্যাংকের নিজস্ব ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া। আর সোনালী ব্যাংকের নিয়ম কানুন যেকোনো সময় পরিবর্তন হয়ে থাকে। তাই আপনি সোনালী ব্যাংকে একাউন্ট করার বিষয়ে আপনার নিকটস্থ শাখায় গিয়ে বিস্তারিত তথ্য নিয়ে অ্যাকাউন্ট খুলতে পারেন।

সোনালী ব্যাংকে একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে এবং প্রয়োজনীয় কাগজ পাতি সম্পর্কে আপনাদেরকে সম্পূর্ণ ধারণা দিতে পেরেছি। সুতরাং আপনি যেকোনো সময় আপনার নিকটস্থ শুনারী ব্যাংকের কোন শাখায় গিয়ে উপস্থিত কর্মচারীর সাথে কথা বলে আবেদন ফরম সংগ্রহ করবেন। তার সাথে উপরে উল্লেখিত কাগজগুলো জমা দিবেন অথবা অনলাইনে সোনালী ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট খুলতে পারেন। সেক্ষেত্রেও আপনাকে উপরে উল্লেখিত ধাপ গুলো অনুসরণ করতে হবে।

প্রিয় পাঠক আপনাদেরকে অবশেষে ধন্যবাদ জানাই আমার এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য। এরকম আরো তথ্যসমৃদ্ধ আর্টিকেল পেতে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি প্রতিনিয়ত ভিজিট করুন। আর অবশ্যই আপনার মূল্যবান মন্তব্যটি আমাদের মন্তব্য বক্সে দিতে ভুলবেন না। আর্টিকেলটি তথ্যবহুল মনে হলে আপনার বন্ধুদের সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন।