গবাদি পশুকে কি খাওয়ালে অল্প সময়ে মোটাতাজা করা যায় এবং গরুর ভিটামিন সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

আমাদের উপমহাদেশে মানুষের চেয়ে গরুর গুরুত্ব বেশি। এবং এই অঞ্চলে মানুষ ও মানুষের নেতাদের অনেকের কাছে মানুষের জীবনের চেয়ে গরুর জীবনে মূল্য বেশি। দেড়শো বছরে গরুর জীবন রক্ষা করতে গিয়ে বহু মানুষ নিজের জীবন পর্যন্ত উপসর্গ করেছেন।
গবাদি পশুকে কি খাওয়ালে অল্প সময়ে মোটাতাজা করা যায় এবং গরুর ভিটামিন সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
স্কুল জীবনে দেখেছি পরীক্ষায় ছাত্রদের গরু বিষয়ে রচনা লিখতে বলা হত। বাঙালির মানুষ নিয়ে আগ্রহ কম। তাই মানুষ সম্পর্কে রচনা আসতো না। দুধ দুগ্ধজাত খাবার, মাংস চামড়ার জন্য এবং কৃষি কাজ ও গাড়ি টানার কাজে গরু ব্যবহৃত হয়।

গবাদিপশুকে কি খাওয়ালে মোটাতাজা হয়

গবাদিপশুর প্রধান খাদ্য লতা গুল্ম তথা সবুজ ঘাস। এছাড়া কৃষি শিল্প উপজাত যেমন খড় আখের আগা ফলের ছোবড়া ইত্যাদি এবং শস্যের উপজাত বা অবশিষ্টাংশ যেমন ছোলা গুড় খৈল ভুসি আনারসের বর্জ্য। সবুজ খাদ্যের তালিকা আরো আছে যেমন জলজ উদ্ভিদ খুদিপান ইত্যাদি।গরুকে এগুলো নিয়মিত খাওয়ালে গরু খুব সহজেই মোটাতাজা হবে।

এছাড়াও গরুকে খাওয়ানো হচ্ছে বয়লার মুরগির খাবার ভিটামিন আইরন জাতীয় ওষুধ স্টেরয়েড ইউরিয়া সার মিশ্রিত ঘর খাওয়ানো ছাড়াও ক্ষতিকর ট্যাবলেটও ইনজেকশন প্রয়োগের বিষয়টি আলোচনা এসেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে যেসব গবাদি পশু কৃত্রিম উপায়ে দ্রুত মোটাতাজা করা হয় সেগুলোর মাংস মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর।

অতিরিক্ত মাত্রায় স্টেরয়েডের ব্যবহারের সঙ্গে সঙ্গে কোন প্রাণী দেহে স্বাভাবিকভাবেই ফুলে যায় চর্বি ও কোষ বৃদ্ধি পায় পশুর শরীরে পানি জমে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত ওজন বেড়ে যায়। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া যে কোন মাত্রায় স্টেরয়েডের ব্যবহার অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।

গবাদি পশুকে কি খাওয়ালে দুধ বেশি হবে

দুধের স্বাদ ও পুষ্টিগুণ অনেকটাই নির্ভর করেই গরুকে কি খাওয়ানো হচ্ছে তার উপর। ঘাস খড় ভুসি ও অন্যান্য প্রাকৃতিক আরগানিক খাবার খাওয়ানো গরুর দুধ বা মাংসের স্বাদ ও পুষ্টি মান কারখানায় তৈরি খাবার বা ফিট খাবার খাওয়ানো গরুর থেকে অনেক ভালো হয় সেটা যে জাতেরই হোক না কেন।
গরুর দুধ বৃদ্ধি করার জন্য পুষ্টিকর খাদ্য দেওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন পাউডার অথবা বিভিন্ন ধরনের রুচি বৃদ্ধি করার মত ওষুধ খাওয়ানো যেতে পারে। গরুর দুধ বৃদ্ধি করতে আঁশ বা ছোবড়া জাতীয় খাবার দানাদার জাতীয় খাবার পানি ইত্যাদি খাওয়াতে হবে।

গবাদি পশুকে ঘাস খাওয়ালে দুধ বৃদ্ধি হয়। ওটস মূলত একটি শীতকালীন ঘাস। এটি সর্বোচ্চ তিন থেকে চার ফুট লম্বা হয়। অন্য যে কোন ঘাসের তুলনায় এর ফলন ও পুষ্টিমান বেশি। তাই গরুকে খাওয়ালে বেড়ে যায় দুধ উৎপাদনও। দুধ বৃদ্ধির জন্য গাভীর জন্য সর্বোত্তম খাদ্য হলো উচ্চমানের চারণ এবং ভুট্টার সাইলেজ যা সঠিক অনুপাতে মাঠের প্রাপ্যতা এবং হজম ক্ষমতা।

গবাদিপশুর সুষম খাদ্য

গবাদি পশুকে প্রতি ১০০ কেজি ওজনের জন্য এক কেজি শুকনো আশযুক্ত খাদ্য খড় এবং তিন কেজি তাজা সবুজ আঁশযুক্ত খাদ্য ঘাস দেওয়া প্রয়োজন। অর্থাৎ ৫০০ কেজি ওজনের একটি দুগ্ধবতি গাভীকে ৫ কেজি শুকনো খড় এবং ১৫ কেজি সবুজ ঘাস সরবরাহ করতে হবে। দানাদার খাদ্যের প্রয়োজনীয়তা দুগ্ধ উৎপাদনের ওপর নির্ভরশীল।

গবাদি পশুকে সুষম খাদ্য খাওয়ালে শরীরে শক্তি ও কাজ করার ক্ষমতা দেয় শরীরে বৃদ্ধি ও ক্ষয় পূরণ করে শরীরকে রোগমুক্ত রাখতে সাহায্য করে। গবাদি পশুর খাদ্য প্রধানত দুই ভাগে বিভক্ত ১. ছোবড়া বা জাতীয় খাদ্য। ২. দানাদার খাদ্য। ছোবড়া জাতীয় খাদ্যগুলো হল নিগুম বা সিম জাতীয় কচি ঘাসের খড় নাড়া খরবা বিছালী গোচারণ ঘাস এবং রক্ষত ঘাস।

গবাদি পশুর প্রীতি ও গঠনে সুষম খাদ্যর গুরুত্ব অপরিসীম। সুষম খাদ্যের অভাবে পশুর অপুষ্টি দেখা দেয় এবং বিভিন্ন রোগবালায়ের আক্রমণ হয়। গবাদি পশুর সুষম খাদ্য বলতে বুঝায় যে খাদ্য আমি শর্করাজ স্নেহ বা চর্বি খনিজ লবণ ভিটামিন বা খাদ্য প্রাণ ও পানির সঠিক অনুপাতে থাকা।

গর্ভবতী গাভীর খাদ্য তালিকা

গর্ভ অবস্থায় গাভীর মধ্যে এক নতুন প্রাণে সঞ্চয় ঘটে। তাই এ সময় বাচ্চার সঠিক গুষ্টির জন্য কিছু বাড়তি খাবারের দরকার পড়ে যাতে গাভীর পুষ্টির চাহিদার ঘাটতি না হয়। কারণ যদি সুস্থ সবল না হয় তাহলে বিভিন্ন রোগ বালাই দেখা দেয় এবং চিকিৎসা তথ্য কিনতে গেলে আরো লোকসান হতে পারে।
গবাদি পশুকে কি খাওয়ালে অল্প সময়ে মোটাতাজা করা যায় এবং গরুর ভিটামিন সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
গর্ভবতী গাভীকে প্রতিদিন ১৪ থেকে ১৫ কেজি সবুজ ঘাস তিন থেকে চার কেজি খড় এবং দুই থেকে তিন কেজি দানাদার খাদ্য এক সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়াতে হবে। দানাদার খাবারের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য উপাদান হচ্ছে গমের ভুসি ১ কেজি খেসারি ভাঙ্গা এক কেজি খোল ২৫০ গ্রাম চিটাগুড়া ১৫০ গ্রাম লবণ ৫০ গ্রাম খনিজ মিশ্রণ ৫০ গ্রাম চাউলের গুড়া ৫০০ গ্রাম খেসারি ভাঙ্গা ১ কেজি।

গবাদি পশুকে ভিটামিন ও মিনারেল প্রিমিক্স যে কারণে খাওয়াবেন

গরুকে ভিটামিন ও মিনারেলের প্রেমিক খাওয়ালে গরুর খাদ্যগ্রহণে চাহিদা বৃদ্ধি পায়। গরুকে ভিটামিন ও মিনারেলের প্রেমিক হলে গরুর দুধ উৎপাদন বৃদ্ধি পায়।গরুকে ভিটামিন ও মিনারেলের প্রেমিক খাওয়ানোর ফলে গরুর শরীরে রোগ কমে যায়। গরুকে ভিটামিন ও মিনারেলের প্রেমিক সালে গরুর খাদ্য গ্রহণে চাহিদা বৃদ্ধি পায়।
গরুকে ভিটামিন ও মিনারেলের প্রেমিক খালি গরুর মাংস উৎপাদন বেড়ে যায়। গরুকে ভিটামিন ও মিনারেলের প্রিমিক্স খাওয়ানোর ফলে তুলনামূলকভাবে গরুর খাদ্য হজম শক্তি বেড়ে যায়। গরুকে ভিটামিন ও মিনারেলের রিমিক্স খাওয়ালে গরুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেকাংশে বৃদ্ধি পায়। গরুকে ভিটামিন ও মিনারেলের প্রেমিক খাওয়ালে গরুর প্রজন্ম ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়ে থাকে।

গরুকে বিভিন্ন প্রকার ভিটামিন উৎপাদন যেমন ভিটামিন এ ভিটামিন ডি ভিটামিন সি ইত্যাদি বাজারে কিনতে পাওয়া যায়। এ ধরনের ভিটামিন ও মিনারেল গরুকে খাওয়ালে গরুর স্বাভাবিক পুষ্টি চাহিদা পূরণ হবে। এছাড়াও গরুর দুধ ও মাংস উৎপাদন সহ গরু পালনে লাভ পাওয়া যাবে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url