কোরবানির ফজিলত সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
হাদিসে বলা হয়েছে কোরবানির দিন আদম সন্তান যে আমল করে তার মধ্যে আল্লাহর নিকট
সবচেয়ে প্রিয় আমল হলো কোরবানির পশুর রক্ত প্রবাহিত করা।
কোরবানির পশু কিয়ামতের দিন নাড়িভুঁড়ি ও চুল পশম দিয়ে উপস্থিত হবে। আর তার
রক্ত জমিনে পতিতফার আগেই আল্লাহর নিকট কবুল হয়ে যায়।
কোরবানি কি
কোরবানি আরবি শব্দ। কোরবান অথবা আদ্বহা বা আযহা কেল্লেখ করা হয় ইসলামী আইন
হিসেবে উল্লেখ করা হয়। যা ঈদুল আযহার সময় পশু উৎসর্গের অনুষ্ঠান। ইসলামী মতে
কোরবানি হচ্ছে নির্দিষ্ট দিনে নির্দিষ্ট ব্যক্তির আল্লাহর সন্তুষ্টি ও পুরস্কার
লাভের আশায় নির্দিষ্ট পশু জবেহ করা।
মুসলমানদের পবিত্র আল-কোরআনের তিনটি স্থানে কোরবানির উল্লেখ আছে যার একটি পশু
কোরবানির ক্ষেত্রে এবং বাকি দুইটি সাধারণ ভাবনার কাজ বজাতে যা দ্বারা আল্লাহর
নিকটবর্তী হওয়া যায়। জিলহাদ মাসের ১০ তারিখ সকাল থেকে ১২ তারিখ সন্ধ্যা পর্যন্ত
আল্লাহর নৈকট্য লাভের জন্য পশু জবাই করাকে ইসলামে কোরবানি বলে।
কোরবানির গুরুত্ব ও ফজিলত
কোরবানির ডিম কোরবানি করা মহান রাব্বুল আলামিনের কাছে সবচেয়ে বেশি পছন্দের।
কোরবানির পশুর রক্ত ভূমিতে পতিত হওয়ার আগেই আল্লাহ তালার দরবারে কবুল হয়ে যায়।
নবী করিম ( সাঃ) বলেন কোরবানির পশুর যত পশম থাকে তার পরিবর্তে ৩৩ টি পূর্ণ লেখা
হয়ে থাকে। হযরত আয়েশা রাঃ থেকে বর্ণিত এক হাদিস থেকে জানা যায় নবী করীম ( সাঃ)
বলেন কোরবানির দিন রক্ত প্রবাহিত করাচ্ছে প্রিয় কোন আমল আল্লাহর কাছে নেই।
কোরবানি কারি কিয়ামতের দিন জবেহকৃত পশুর লোম শিং খুর দশম ইত্যাদি নিয়ে আল্লাহর
কাছে উপস্থিত হবে। সেই সাথে কোরবানির গুরুত্ব সম্পর্কে হযরত আবু হুরাইরা ( রাঃ)
বর্ণিত এক হাদিস থেকে জানা যায় নবী করিম ( সাঃ) বলেন যে ব্যক্তি সামন্ত থাকা
সত্ত্বেও কোরবানি করলো না সে যেন আমাদের ঈদগাহের নিকটবর্তী না হয়।
কোরবানির ইতিহাস
পৃথিবীর ইতিহাসে হযরত আদম আ. এর দুই পুত্রের কুরবানীর মাধ্যমে মুসলিম উম্মাহর
কোরবানি সূচনা হয়। আল কুরআনে হাবিল এবং কাবিলের উল্লেখ পাওয়া যায়। হাবিল প্রথম
মানুষ যে আল্লাহর জন্য একটি পশু কোরবানি করেন। ইবনে কাসীর বর্ণনা করেছেন যে হাবিল
একটি ভেড়া এবং তার ভাই কাবিল তার ফসলের কিছু অংশ স্রষ্টার উদ্দেশ্যে নিবেদন করে।
আল্লাহর নির্ধারিত পদ্ধতি ছিল যে আগুন আকাশ থেকে নেমে আসবে এবং গ্রহণযোগ্য
কোরবানি গ্রহণ করবে।
তদানুসারে আগুন নেমে আসে এবং হাবিলের জবেহকৃত পশুটির কোরবানি গ্রহণ করে। অন্যদিকে
কাবিলের ফসল কোরবানি প্রত্যাখ্যান করে। কাবিল এই ঘটনায় ঈর্ষান্বিত হয়
সামাজিকভাবে অপমান বোধ করে কোরবানি কবুল না হয় বিষয়টি তার ভাই হাবিলকে হত্যা
করে। যা মানব ইতিহাসের প্রথম হত্যাকাণ্ড হিসেবে পরিচিত। কাবিল তার কৃতকর্মের জন্য
অনুতপ্ত না হয় আল্লাহ তাকে ক্ষমা করেননি।
কোরবানির শিক্ষা
কোরবানির শিক্ষা হলো আত্মত্যাগের শিক্ষা। মহান রাব্বুল আলামীনের সমীপে
আত্মসমর্পণের শিক্ষা, তাকওয়া বা প্রভু প্রেম এবং ইখলাস তথা একনিষ্ঠ আত্মনিবেদনের
শিক্ষা। পশু কোরবানি একটি প্রতীক মাত্র। কোরবানির মূল প্রতিপাদ্য হলো মহান রবের
জন্য সবকিছু বিসর্জন দেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকা।
কোরবানির শিক্ষার অন্যতম হচ্ছে পশুর গলায় ছুরি চালানোর পাশাপাশি কোরবানি কারি
নিজের আমল আখলাক চলনে বলনে জীবন যাপনে ধর্মবিবর্জিত যে ধ্যান ধারণা আছে তার
গলায়ও চুরি চালাতে হবে। তথা কোরআন হাদিসের নিষেধকৃত বিষয়গুলো নিচের জীবন থেকে
বাদ দেবে অর্থাৎ নির্মূল করবে এটাই কোরবানির শিক্ষা।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url