অতিরিক্ত তাল খেলে কি হয়
তাল আমাদের দেশে বেশ জনপ্রিয় একটি মৌসুমী ফল। কাঁচা অবস্থায় তাল চাষ ও পাকলে
তার মম গন্ধে যেন ভরে ওঠে মন।
আর পাকা তাল মানেই হল তালের রস দিয়ে তৈরি বড়া তালের ক্ষীর তালের ভাপা তালের কেক
আরো কত রকমের পিঠা। নারিকেল ও তাল দিয়ে ভাত খাওয়ার প্রচলন আছে আমাদের দেশে।
অনেকে আবার তাল দিয়ে রুটি খেতেও পছন্দ করেন।
তাল খাওয়ার উপকারিতা
তাহলে আছে ভিটামিন এ, বি, সি। এছাড়াও জিংক পটাশিয়াম ক্যালসিয়াম সহ আরো অনেক
খনিজ উপাদান রয়েছে। তার সঙ্গে আর ও থাকে অ্যান্টি-অক্সিজেন ও
অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি উপাদান। সব মিলিয়ে এই ফাঁদ পুষ্টিগুণে ভরা। আমাদের শরীরে
নানা ধরনের উপকার করতে পারে তাহলে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য। এটি ক্যান্সার
প্রতিরোধে কার্যকরী ভূমিকা রাখে।
তাহলে থাকা ভিটামিন বি এ টি এই ফলের সবচেয়ে বড় উপকারিতা। এ ভিটামিন রোগ
প্রতিরোধ শক্তি বাড়াতে কাজ করে। সেই সঙ্গে এটি শরীরে আরো নানা উপকার করে। তাই
নিয়মিত তাল খাওয়া উপকারী। তাল খেলে অন্ত্রের রোগ ও কোষ্ঠকাঠিন সাজিয়ে তুলতে
কাজ করে।
যারা এই ধরনের সমস্যায় ভুগছেন তাদের জন্য তার একটু উপকারী ফল হতে পারে।তালে
প্রচুর ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস আছে যা দাঁত ও হাড়ের ক্ষয় প্রতিরোধে সহায়তা করে।
এছাড়া স্বাস্থ্য রক্ষায় ও স্মৃতিশক্তি বাড়াতেও তার বেশ উপকারী। তালে আছে
ভিটামিন বি তাই ভিটামিন বি এর অভাবজনিত রোগ প্রতিরোধে তাল ভূমিকা রাখে।
তাল খাওয়ার অপকারিতা
তাল শাঁস নিঃসন্দেহে উপকারী। তবে তা অতিরিক্ত খাওয়া ফলে পেট গরম হয়ে পেট ব্যথা
বমি ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই অতিরিক্ত তাল খাওয়া থেকে বিরত থাকতে
হবে। সমস্যা আছে তা তাল শাঁস খেলে শরীরে পটাশিয়াম বেড়ে যেতে পারে। তালে সাধারণত
উৎস ক্যালোরি থাকে যা মানুষিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের জন্য সমস্যা সৃষ্টি করতে
পারে।
আরো পড়ুনঃ লিচু খাওয়ার উপকারিতা এবং অপকারিতা
তাই যারা ওজন কমাতে চান বা ক্যালোরি নিয়মিত রাখতে চান তাদের জন্য তাল খাওয়া
থেকে বিরত থাকতে হবে। কিছু মানুষের তাহলে এলার্জি সমস্যা থাকতে পারে। তাই যাদের
অ্যালার্জির সমস্যা রয়েছে তাদের তাল খাওয়া উচিত না।
তালের শাঁস খেলে যেসব উপকার মিলবে
তালশাঁস রয়েছে ভিটামিন এ যা দৃষ্টিশক্তিকে প্রখর করতে সাহায্য করে। শরীরের জন্য
উপকারী ভিটামিন সি ও বি কমপ্লেক্স মেলে এতে। ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়া চুল পড়া
ইত্যাদি রোধে রোদ করতে সাহায্য করে তালশাঁস। তালের শাঁসে থাকা ক্যালসিয়াম হাঁড়
গঠনে দারুন ভূমিকা রাখে। তাল শাঁস শরীরের কোষের ক্ষয় প্রতিরোধ করে।
কোষ্ঠকাঠিন্য ও হজমে গন্ডগোল দূর করতে বেশ কার্যকরী তালশাঁস। আইরন পাওয়া যায় এই
ফলে। নিয়মিত তাল খেলে দূর হয় অ্যামোনিয়া বা রক্তশূন্যতার মত সমস্যা। তালের
শাঁস লিভারের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। এটি লিভার থেকে ক্ষতিকর ও দূষিত
পদার্থ বের করে দেয়। তার শাঁসের প্রায় পুরোটাই পানি।
গরমে শরীরের বাড়তি পানি চাহিদা মেটাতে সাহায্য করে এই ফল। তাই পানি ও পানি
জাতীয় খাবারের পাশাপাশি এই ফল খাওয়া যেতে পারে। উচ্চমাত্রায় সোডিয়াম এবং
পটাশিয়াম মেলে তাহলে শাঁসে। যা শরীরে ইলেকট্রোলাইট ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়তা
করে। ফলে গরমে ক্লান্তি দূর হয়।
পাকা তালের পুষ্টিগুণ
পাকা তালে রয়েছে ভিটামিন এ বি সি জিং পটাশিয়াম আয়রন ক্যালসিয়াম এছাড়াও
রয়েছে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরির মতো প্রয়োজনীয় উপাদান।
পুষ্টি বিদদের মতে ১০০ গ্রাম পাকা তালের রয়েছে খাদ্য শক্তি ৮৭ কিলো ক্যালরি,
জলীয় অংশ ৭৭.৫ গ্রাম আমিষ ৮ গ্রাম, চর্বি ১ গ্রাম, শরকরা ১০.৯ গ্রাম, খাদ্য আঁশ
১ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ২৭ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ৩০ মিলিগ্রাম, আইরন ১ মিলিগ্রাম, আমিন
.০৪ মিলিগ্রাম,রিবোফ্লাভিন .০২ মিলিগ্রাম, নিয়াসিন .৩ মিলিগ্রাম ও ভিটামিন সি ৫
মিলিগ্রাম।
পাকা তাল খেলে যেসব রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে
বিশেষজ্ঞরা বলেন পাকা তালে রয়েছে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স। তাল খেলে শরীরে ভিটামিন
বি এর ঘাটতি পূরণ করে। এতে থাকা ক্যালসিয়াম অভ্যাসপারাস চাঁদ ও হাড়ের ক্ষয়
প্রতিরোধ করে। তার খাওয়ার অভাবে পুরুষত্বহীনতায় উপকার পাওয়া যায়। বমি ভাব দূর
করতেও পাকা তাল খেতে পারেন। যদি পুরনো কোন কাশি কোনভাবে আপনার পিছু না ছাড়ে তবে
তাল খেয়ে উপকার পাবেন।
আরো পড়ুনঃ
গাছ পাকা আম চেনার উপায়
পাকা তাল খাওয়ার সবচেয়ে ভালো সুফল হলো এতে থাকা এন্টিঅক্সিডেন্ট উপাদানটি
ক্যান্সার প্রতিরোধ করার ক্ষমতা রয়েছে। পাশাপাশি ভুলে যাওয়া প্রবণতা থেকে
আপনাকে মুক্তি দিতে স্মৃতিশক্তিকে বেশ প্রর্কর করতে তুলতে পারে পাকা তাল। বাতের
ব্যথা দূর করতে তাহলে রস বেশ উপকারী। আপনি যদি প্রতিদিন ১০০ গ্রাম তাল কোন চিনি ও
পানি না মিশিয়ে খান তবে আপনার দাঁতের ব্যথা ধীরে ধীরে অনেকাংশে উপশম হবে।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url