বাদাম খেলে কি হয় বাদাম সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
বাটাম একটি মুখরোচক খাদ্য। এটি খেতে যেমন সুস্বাদু তেমনি এর রয়েছে অনেক
পুষ্টিগুণ।
চিনা বাদাম কাজুবাদাম কাঠবাদাম পেস্তা বাদাম সব ধরনের অনেক উপাদান রয়েছে যা
শরীরের জন্য উপকারী। তবে অন্য সব খাবারের মতো বাদাম খাওয়ার একটি নির্দিষ্ট
পরিমাণ রয়েছে। প্রয়োজনের চেয়ে বেশি বাদাম খেতে থাকলে শরীরের ক্ষতি হতে পারে।
বাদাম খাওয়ার উপকারিতা
পুষ্টিগুণ এবং শারীরিক উপকারিতা দিক থেকে দেখতে গেলে বাদামের কোন বিকল্প হয় না।
বাদাম খেলে হৃদপিণ্ড ও রক্তের ভালো কোলেস্টেরল বাড়ায়। হৃদপিন্ড ভালো রাখতে
সাহায্য করে। বাদাম খেলে চোখ ত্বক হাড় ও দাঁতের গঠন করতে সাহায্য করে। বাদাম হজম
প্রক্রিয়া মজবুত করে। বাদাম খেলে মস্তিষ্কের বিকাশে সাহায্য করে স্মৃতিশক্তি
বাড়ায়।
বাদাম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে এই
বাদাম। পুষ্টিগুণ এবং শারীরিক উপকারিতা দিক থেকে দেখতে গেলে বাদামের কোন বিকল্প
হয় না। আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য বাদাম খুবই উপকারী। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন
ই ক্যালসিয়াম প্রোটিন ফাইবার সেলেনিয়াম ভিটামিন সি অ্যান্টি অক্সিডেন্ট
অ্যামাইনো এসিড পটাশিয়াম এবং ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডসহ আরও কত কী যে আছে, যা
নানাভাবে শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধি করে শরীরকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে।
বাদাম নিয়মিত খেলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে। বাদামে ফোলিক অ্যাসিড আর ফাইটিক
অ্যাসিড রয়েছে। এই দুই অ্যাসিড কোলন ক্যান্সারের মতো রোগ নিয়ন্ত্রণ করতে
সাহায্য করে। একটি গবেষণায় দেখা গেছে বাদাম যদি নিয়মিত খাওয়া যায় তাহলে
রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। ফলে ডায়াবেটিসে ঝুঁকি প্রায় ৩০ শতাংশ
কমে আসে।
অতিরিক্ত বাদাম খেলে কি হয়
অতিরিক্ত বাদাম গ্রহণ করলে পলি আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড প্রধানত ওমেগা-৬।
ওমেগা -৬ ফ্যাটি এসিড যখন বেশি পরিমাণে থাকে তখন ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড বিক্রিয়া
করে টক্সিক হয়ে যায়। ওমেগা ৬ অতিরিক্ত পরিমাণে গ্রহণ করা হলে তা হার্টের রোগ,
আর্থাইটিস, ডায়াবেটিস এলার্জি ও অ্যাজমা রোগ সৃষ্টি করে।
আরো পড়ুনঃ ছোলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
যদিও বাদামে উপকারী ফ্যাট থাকে তবে আপনি যদি প্রতিদিন বাদাম খান তাহলে বৃদ্ধি
পাবে ওজন। বেশি বাদাম খেলে তা শরীরে মিনারেল শোষণ কমিয়ে দেয়। এজন্য দায় বাদামে
উপস্থিত ফাইটিক এসিড। বাদামে সোডিয়াম এর পরিমাণ কম থাকায় আপনি যখন হালকা লবণ
দিয়ে বাদাম খাবেন তখন তা হুট করে রক্তচাপ বাড়িয়ে দিতে পারে।
অতিরিক্ত সোডিয়াম রক্ত প্রবাহ থেকে পানি এবং ফ্লুইড শোষণ করে নেয় আর এর ফলে
উচ্চ রক্তচাপ দেখা দেয়। যাদের অ্যালার্জি সমস্যা আছে নতুন করে অতিরিক্ত বাদাম
খেলে তা থেকে অ্যালার্জি হতে পারে। বাদাম থেকে অ্যালার্জি সৃষ্টি কিছু লক্ষণ হল
ত্বকের চুলকানি শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়া।
প্রতিদিন কতটুকু বাদাম খাওয়া উচিত
প্রতিদিন ৪২ গ্রাম বা ১৬ টি বাদাম খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন পুষ্টিবিদরা। আবার
অনেকেই পরামর্শ দৈনিক এক মুঠো বাদাম খাওয়া যেতে পারে বিশেষ করে আপনি যখন
ক্ষুধার্ত। সারাদিনে ৮ থেকে ১০ টির বেশি চিনেবাদাম খাওয়া উচিত নয়। আর দৈহিক
ছয়টার মত আমন্ড এবং দুইটা ওয়ালনাট খাওয়া যায়।
১০ গ্রাম কাঠবাদাম হলো ৮ থেকে ৯ টি কাঠবাদাম অবশ্য এটি আকারের ওপর অনেকটা নির্ভর
করে। ১০ গ্রাম কেসুনাট ছয়টি কেসুনাট। ১০ গ্রাম পিনাট হলো ১২টি পিনাট। গবেষণায়
বলা হয় প্রতিদিন ১০ গ্রাম বাদাম খেলে আয়ু বাড়ে। এক শতাংশ ক্যান্সার প্রতিরোধ
হয়। মস্তিষ্কের স্নায়ুজনিত সমস্যা সাত ভাগ প্রতিরোধ হয়। ১৭ ভাগ হৃদরোগের ঝুকি
কমে। বাদাম কে দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় রাখুন।
বাদামের পুষ্টিগুণ
পুষ্টিগুণ এবং শারীরিক উপকারিতা ক্ষেত্রে বাদামের কোন বিকল্প হয় না। বাদামে
রয়েছে প্রায় ৩.৫ গ্রাম ফাইবার, ৬ গ্রাম প্রোটিন, ১৪ ফ্যাট সহ ভিটামিন ই,
ম্যাঙ্গানিজ, ভিটামিন বি ২, ফসফরাস এবং ম্যাগনেসিয়াম। এই সব কয়টি উপাদানই
শরীরকে সুস্থ রাখতে বিশেষ কাজ করে থাকে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে তো একাধিক ক্রনিক
রোগকে দূর রাখতে এই উপাদান গুলো সাহায্য করে।
এক মুঠো বাদাম খেলে শরীরে মাত্রা ১৬১ ক্যালোরি প্রবেশ করে। ফলে এই খাবারটি খেলে
ওজন বেড়ে যাওয়ার কোন ভয় থাকে না।বাদাম এমন একটি উপাদান যা ক্যান্সার প্রতিরোধ
করার পাশাপাশি অন্যরকম প্রতিরোধ ক্ষমতা উন্নত ঘটানোর মধ্যে দিয়ে নানা বীজ
সংক্রমণকে দূরে রাখতে ও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
সকালে কাঁচা বাদাম খাওয়ার উপকারিতা
কাচা বাদামে ক্যালসিয়াম প্রোটিন ওমেগা ৩, আইরন ও ভিটামিন ই রয়েছে। রোগ প্রতিরোধ
ক্ষমতা বৃদ্ধি,বিশেষজ্ঞদের মতে যারা নিয়মিত কাঁচা বাদাম খেয়ে থাকেন তাদের শরীরে
অন্যদের তুলনায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি থাকে। কাচা বাদাম নিয়মিত খাওয়ার ফলে
হাড় শক্তিশালী হয়। নিয়মিত গাছটা বাদাম খাওয়ার ফলে হাড় গঠনে বেশ উপকার পাওয়া
যায়।
আরো পড়ুনঃ অতিরিক্ত তাল খেলে কি হয়
এছাড়া ত্বকের বলিরেখা রোদ করে ত্বক ও চুল ভালো রাখে। শীতে গুড়ের সঙ্গে ভেজানো
চিনা বাদাম খেলে শরীরের জয়েন্ট ও কোমর ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এটি
ক্যালসিয়াম সরবরাহ করে। এছাড়া যাদের সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য অনেক উপকারী এই
চিনা বাদাম।
আমার মতামত
আমরা সকলে জানি যে বাদাম আমাদের শরীরের জন্য অনেক বেশি উপকারী। আজকের এই
পোস্টটিতে আমি বাদাম খেলে কি হয় এবং বাদাম সম্পর্কে যথেষ্ট পরিমাণের ধারণা
দেওয়ার চেষ্টা করেছি আপনাদেরকে। যদি আমার এই পোস্টটি পড়ে আপনারা একটু হলেও
উপকৃত হন তাহলে অবশ্যই আমার ওয়েবসাইটটি প্রতিদিন ভিজিট করুন।
আমি প্রতিনিয়ত নিত্য নতুন আর্টিকেল পাবলিশ করি আমার এই ওয়েবসাইটটিতে। বাদাম
খেলে কি হয় এই পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। আমার এই
পোস্টটিতে কোন ভুল ত্রুটি থাকে অবশ্যই আপনার সুন্দর মন্তব্যের মাধ্যমে আমাকে
জানাবেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url