কাঁঠালের উপকারিতা ও অপকারিতা-কাঁঠাল খেলে কি ওজন বাড়ে

কাঁঠালের উপকারিতা সম্পর্কে কথা বলতে গেলে সেগুলো বলে শেষ করা যাবে না তারপরও আমি স্বল্পপরিসরে কাঁঠালের উপকারিতা সম্পর্কে আপনাদেরকে সবকিছু ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করব।
কাঁঠালে অনেক রকমের ভিটামিন রয়েছে ভিটামিন এ ভিটামিন বি পটাশিয়াম ক্যালসিয়াম ম্যাগনেসিয়াম নানা রকমের পুষ্টি ও খনিজ উপাদান এই কাঁঠালের পাওয়া যায়। ভিটামিন সি আমাদের রোগ প্রতিরোধ শক্তিকে দ্বিগুণ শক্তিশালী করে তোলে। আমাদের ত্বকের উজ্জ্বলতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। নখ , চুল ও দাঁতের পুষ্টি যোগাতেও অনেক সাহায্য করে।

কাঁঠালের উপকারিতা

  • প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ রয়েছে কাঁঠালে। এই ভিটামিন দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে।
  • ফাইবারের ভালো একটি উৎস কাঁঠাল। কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা থেকে দূরে থাকা সম্ভব হয় নিয়মিত কাঁঠাল খেলে।
  • আলসারের সমস্যা প্রাকৃতিক উপায়ে কমাতে সাহায্য করে কাঁঠালে থাকা এক ধরনের উপকারী উপাদান।
  • বেশ কয়েক ধরনের অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের উৎস কাঁঠাল। এসব উপাদান হৃদরোগ ও ডায়াবেটিসের মতো রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
  • কাঁঠালে থাকা পটাসিয়াম উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। এতে হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমে।
  • প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি মেলে কাঁঠাল থেকে। নিয়মিত ফলটি খেলে তাই ত্বক ভালো থাকে ও ত্বককে রোদের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে দূরে রাখা যায়।
  • অনেকক্ষণ পর্যন্ত পেট ভরা থাকে কাঁঠাল খেলে। ফলে অস্বাস্থ্যকর খাবার থেকে দূরে থাকা যায় ও ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে।
  • বেশ কয়েক ধরনের অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের উৎস কাঁঠাল। এসব উপাদান হৃদরোগ ও ডায়াবেটিসের মতো রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
  • ক্যানসারের ঝুঁকি কমে কাঁঠাল খেলে। কারণ কাঁঠালে থাকা শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আমাদের দেহকে ক্ষতিকর ফ্রির‌্যাডিকেলস থেকে রক্ষা করে।
  • শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে কাঁঠালে থাকা ভিটামিন সি।
  • কাঁঠালে থাকা ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম হাড়ের গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। পাশাপাশি হাড় শক্তিশালী রাখতে সহায়তা করে।
  • আয়রন মেলে ফলটি থেকে। এই খনিজ উপাদান রক্তস্বল্পতা দূর করতে সাহায্য করে।

স্বপ্নে কাঁঠাল দেখলে কি হয়

স্বপ্নে কাঁঠাল দেখা খুব ভালো একটি লক্ষণ । স্বপ্নে কাঁঠাল দেখা স্বপ্নদ্রষ্টার জন্য অনেক কল্যাণকর লক্ষণ। কি কারনে স্বপ্নে কাঁঠাল দেখা কল্যাণকর লক্ষণ তা নিয়েই এখন আলোচনা করব। আপনারা যারা স্বপ্নে কাঁঠাল দেখে থাকেন তারা নিশ্চয়ই জেনে খুশি হবেন যে আপনাদের জীবনে সমৃদ্ধি আসতে চলেছে। হ্যাঁ, স্বপ্নে কাঁঠাল দেখার ব্যাখ্যা হল স্বপ্নদ্রষ্টার জীবনে ধন-সম্পদের আগমন হতে চলেছে।
এখন আপনাদের মনে প্রশ্ন আসতে পারে কাঁঠাল কিভাবে দেখলে আমাদের জন্য কল্যাণ হবে।স্বপ্নের মধ্যে কোন ব্যক্তি যদি কাঁঠাল খেতে দেখে, কাঁঠাল বহন করতে দেখে, গাছে কাঁঠাল ঝুলে থাকতে দেখে, অন্য কাউকে কাঁঠাল খেতে দেখে এই সবগুলো স্বপ্নের অর্থ হবে স্বপ্নদ্রষ্টার জীবনে সমৃদ্ধি আসার সম্ভাবনা। আমরা সকলেই নিজেদের উন্নতির জন্য দিনের পর দিন পরিশ্রম করে চলেছি।

সবকিছুর আগে আমরা নিজেদের অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করার জন্যই পরিশ্রম করি। অনেক পরিশ্রমের পরও আমাদের অনেকের ভাগ্যের চাকা খুলে না। কেউ কেউ খুব অল্প সময় পরিশ্রম করেই সফলতা লাভ করে আবার কেউ কেউ দিনের পর দিন পরিশ্রম করেও সফলতার মুখ দেখতে পায় না। তবে কোন ব্যক্তি যদি দিনের পর দিন পরিশ্রম করতে করতে স্বপ্নের মধ্যে হঠাৎ কাঁঠাল দেখতে পায় তাহলে সে নিশ্চয়ই এখান থেকে উৎসাহিত হয়ে পরিশ্রম চালিয়ে যেতে পারবে কারণ স্বপ্নে কাঁঠাল দেখা মানুষের জীবনে সফলতা আসার পূর্বাভাস দেয়।
কোন বন্ধ্যা মহিলা যদি স্বপ্নের মধ্যে কাঁঠাল দেখে তবে তার সন্তান আসার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়। অনেকে হয়তো দিনের পর দিন বাচ্চা না হওয়ার কারণে সারাক্ষণ মন খারাপ করে থাকে। স্বপ্নের মধ্যে কাঁঠাল দেখলে এই মানুষগুলো নিশ্চয়ই এখান থেকে বেঁচে থাকার অবলম্বন খুজে নিতে পারেন।কোন অবিবাহিত ব্যক্তি যদি স্বপ্নে কাঁঠাল দেখে তবে তাদের বিবাহের সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়।

দীর্ঘদিন চেষ্টা করার পরেও অনেকে নিজের জীবন সঙ্গী খুঁজে পান না। এই ধরনের মানুষ গুলো মানসিকভাবে অনেক দুর্বল হয়ে পড়ে। এই অবস্থায় স্বপ্নের মধ্যে কাঁঠাল দেখলে বুঝে নিতে হবে খুব দ্রুত তার বিবাহের সম্বন্ধ হতে চলেছে। আপনারা নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন স্বপ্নের মধ্যে কাঁঠাল দেখা কেন কল্যাণকর লক্ষণ।

কাঁঠালের অপকারিতা

কাঁঠাল আমাদের জাতীয় ফল। কাঁঠালের যেমন উপকারিতা রয়েছে তেমনি কাঁঠালের উপকারিতা রয়েছে এখানে আলোচনা করব কাঁঠালের অপকারিতা সম্পর্কে। কাঁঠালের অপকারিতা নিচে উল্লেখ্য করা হলো জেনে নিনঃ
যাদের ডায়াবেটিস আছে, তাঁদের কাঁঠাল খাওয়ায় কিছুটা বিধিনিষেধ আছে। কিডনি রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে যাঁদের রক্তে পটাশিয়ামের মাত্রা বেশি, তাদের কাঁঠাল না খাওয়াই ভালো। তাছাড়াও অধিক পরিমাণে কাঠাল খেলে তা বদহজম হতে পারে।চলন তাহলে দেখে নেই কাঁঠাল খাওয়ার পর কি কি ফল খাওয়া যাবে নাঃ
  1. কাঁঠাল খাওয়ার পর দুধ খেলে পেট ফুলে যেতে পারে এবং ত্বকে ফুসকুড়ি আবার সাদা সাদা দাগের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  2. কাঁঠাল খাওয়ার পরে আপনি যদি পেঁপে খেতে যান তাহলে মুখে বা শরীরে এলার্জি চুলকানির সমস্যাদেখা দিতে পারে।
  3. কাঁঠাল খাওয়ার পর যদি ঢেঁড়স খেয়ে থাকেন তাহলে এসিডিটির সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  4. কাঁঠাল খাওয়ার পর পানি খেলে আপনার মৃত্যু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

কাঁঠাল খেলে কি ওজন বাড়ে

কাঁঠালের পুষ্টিমান বলতে গেলে, প্রতি ১০০ গ্রাম কাঁঠালে খাদ্য-আঁশ থাকে দুই গ্রাম, শর্করা ২৪ গ্রাম, চর্বি দশমিক ৩ মিলিগ্রাম, ক্যালসিয়াম ৩৪ মিলিগ্রাম, ম্যাগনেশিয়াম ৩৭ মিলিগ্রাম, পটাশিয়াম ৩০৩ মিলিগ্রাম, ভিটামিন এ ২৯৭ আইইউ এবং ভিটামিন-সি ৬ দশমিক ৭ মিলিগ্রাম। আর কাঁঠালে কোলেস্টেরলের মাত্রা শূন্য। তাই কাঁঠাল স্বাস্থ্যের জন্য নিরাপদ।

যেকোনো বয়সের মানুষ এটা খেতে পারেন। কাঁঠাল শক্তির ভালো উৎস। এতে আছে ভালো শর্করা। কাঁঠালে চর্বির পরিমাণ খুব কম থাকায় খেলেও ওজন বাড়ার কোনো শঙ্কা নেই।তবে কাঁঠালে বিচিতে আঁশ থাকে তাই বেশি খেলে হজমে সমস্যা হতে পারে। যাদের ডায়াবেটিস আছে, তাঁদের কাঁঠাল খাওয়ায় খানিকটা বিধিনিষেধ আছে।
কিডনি রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে যাদের রক্তে পটাশিয়ামের মাত্রা বেশি, তাদের কাঁঠাল না খাওয়াই ভালো। তবে যদি কোনো ডায়াবেটিসের রোগী দিনে পাকা কাঁঠালের তিন থেকে চারটি কোষ খান তাহলে ওই দিন অন্য কোনো মিষ্টি ফল খাবেন না। কিন্তু সবার রোগের তীব্রতা সমান নয়, তাই কাঁঠাল যদি খেতেই হয়, চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে খাওয়াই ভালো।

কাঁঠাল কোন জেলায় বেশি হয়

খরা বেশি দেখা যায় বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে যেমন : দিনাজপুর, রংপুর, বগুড়া, রাজশাহী ইত্যাদি অঞ্চলে। 
বাংলাদেশের উত্তর- পশ্চিমাঞ্চলে দীর্ঘকাল ধরে শুষ্ক আবহাওয়া এবং অপর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত ও অল্প সংখ্যক নদী থাকার

কাঁচা কাঁঠালের পুষ্টিগুণ

কাঁঠালে সামান্য পরিমাণ প্রোটিন রয়েছে। প্রতি ১০০ গ্রাম পাকা কাঁঠালে ১.৮ গ্রাম, কাঁচা কাঁঠালে ২০৬ গ্রাম ও কাঁঠালের বীজে ৬.৬ গ্রাম প্রোটিন পাওয়া যায়। এই প্রোটিন দেহের গঠনে সাহায্য করে। কাঁঠালে রয়েছে শ্বেতসার। পাকা কাঁঠালে ০.১ গ্রাম, কাঁচা কাঁঠালে ০.৩ ও কাঁঠালের বীজে ০.৪ গ্রাম শ্বেতসার পাওয়া যায়।কাঁঠালে রয়েছে ভিটামিন ‘এ’। ভিটামিন ‘এ’ দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। কাঁঠালের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান চোখের রেটিনার ক্ষতি প্রতিরোধ করে।কাঁঠালে রয়েছে ভিটামিন ‘সি’। পাকা কাঁঠালে ২১ মি. গ্রাম, কাঁচা কাঁঠালে ১৪ মি. গ্রাম এবং কাঁঠালের বীজে ১১ মি. গ্রাম ভিটামিন ‘সি’ পাওয়া যায়।

আমার মতামত

আমরা সকলে কাঁঠালের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে একটু হলেও ধারণা পেয়ে গেছি। কোন কিছুই অতিরিক্ত ভালো না যেরকম কাঁঠালের উপকারিতা আছে সেইরকম কাঁঠালের উপকারিতা ও থাকবে এটাই স্বাভাবিক।

এজন্য আমরা সব সময় সবকিছু নির্দিষ্ট মাত্রায় খাওয়ার চেষ্টা করব। প্রিয় পাঠক যদি আমার এই পোস্টটি আপনার একটু হলেও সাহায্যে এসে থাকে তাহলে অবশ্যই আমার ওয়েবসাইটটি প্রতিদিন ভিজিট করবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url