ছোলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

ছোলা বাঙালির খাদ্য ভাসে অতি পরিচিত একটি উপাদান। রোজার মাসে ইফতারের পাতে ছোলা থাকবেই। এছাড়াও সারা বছর ঘরে কিংবা বাইরে ছোলা খাওয়া হয়।
ছোলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
মুড়ি মাখায় ছোলার উপস্থিতি সবচাইতে বেশি দেখা যায়। রাস্তার পাশে দোকান থেকে এক প্লেট ছোলা খেয়ে বিকেলের নাস্তা সেরে ফেলা মানুষ পাওয়া যাবে অসংখ্য। আবার ব্যায়ামবিদ কিংবা স্বাস্থ্য সচেতন অনেকেই সকালে এক মুঠ ভেজানো কাঁচা ছোলা খেয়ে থাকেন।

ছোলা খাওয়ার উপকারিতা

হজম ক্রিয়া সহজ করার জন্য অভ্যাসক একটি উপাদান হলো ভোজ্য আঁশ। আর এই ভোজ্য আঁশের অভাব পুরো বিশ্বব্যাপী একটি উল্লেখযোগ্য সমস্যা। ছোলা আসে ভোজ্য আঁশের ঘাটতি পূরণে অন্যান্য একটি খাবার। উচ্চমাত্রায় র‌্যাফিনোজ নামক দ্রবণীয় ভোজ্য আঁশ আছে ছোলায়। এই উপাদান পেটের খাবার ভাঙ্গে ধীর গতিতে।

কারণ একমাত্র স্বাস্থ্যকর ব্যাক্টেরিয়াই ‘র‌্যাফিনোজ’কে ভাঙতে সক্ষম। মল অপসারণের কষ্ট কমায় এবং তা নিয়মিত করতে সহায়ক ছোলা। ছোলা ক্যান্সারে ঝুকি কমায়। ছোলা পেতে গিয়ে তৈরি করে বিউটারেট নামক ফ্যাটি অ্যাসিড। বিশেষজ্ঞরা বলেন এই ফ্যাটি অ্যাসিড মানুষের শরীরের রোগাক্রান্ত ও মৃতপ্রায় কোষ দমন করে যাতে সুস্থ কোষগুলো সুরক্ষিত থাকে। এভাবেই কলোরেক্টাল ক্যান্সার দমন করে ছোলা।
ছোলায় থাকা ভোজ্য আঁশ ম্যাগনেসিয়াম ও ক্যালসিয়াম হাড়ের সুস্থতা বজায় রাখে এবং তা শক্তিশালী করে তোলে। সকল কৌটাজাত খাবারের মত ছোলাও কৌটাজাত হলে তাতে যুক্ত থাকবে বিভিন্ন রাসায়নিক প্রিজারভেটিভ। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তার শারীরিক কোন সমস্যা সৃষ্টি করে না। কৌটার ধাতু সমস্যার কারণ হতে পারে। এছাড়াও খালি পেটে কাঁচা ছোলা খেলে রক্তের শর্করার মাত্রা ও কমায় এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতেও সাহায্য করে।

ছোলা খাওয়ার অপকারিতা

ছোলায় প্রচুর পটাশিয়াম থাকে। তাই কিডনি জনিত সমস্যায় আক্রান্তদের জন্য ছোলা ক্ষতিকর। পেটে ব্যাথা থাকলে ছোলা খাওয়া উচিত নয়। কৌটাজাত ছোলা ব্যবহার করার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। কারণ কৌটাজাত খাবার থেকে বটুলিজম নামক বিক্রিয়া হতে পারে। অতিরিক্ত ছোলা খেলে গ্যাস্টিকের সমস্যা হতে পারে।

কাঁচা ছোলার উপকারিতা

ভেজানো ছোলায় রয়েছে কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট প্রোটিন এবং ফাইবার। যা হজম প্রক্রিয়া ধির করে দেয় এবং শরীরে শর্করার শোষণ নিয়ন্ত্রণ করে। খালি পেটে কাঁচা ছোলা খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা এবং ডায়াবেটিসের ঝুকি কমাতেও সাহায্য করে।প্রোটিন ফাইবারে পরিপূর্ণ এই ছোলা। ছোলার থাকা শর্করা দ্রুত গ্লুকোজ হয় রক্তে যায় না। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ছোলা খুবই উপকারী।
ছোলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
কাঁচা ছোলা ভিজিয়ে আদার সঙ্গে খেলে শরীরে আমিষ ও অ্যান্টিবায়োটিকের চাহিদা পূরণ হয়। আমিষ মানুষের শরীরকে শক্তিশালী করে তুলে এবং অ্যান্টিবায়োটিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। সোলায় ভিটামিন বি আছে পর্যাপ্ত পরিমাণে। যা মেরুদন্ডের ব্যথা স্নায়ু দুর্বলতা কমায়। থাকা প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি দীর্ঘক্ষন ধরে শরীরে শক্তি যোগান দেয়।

ছোলা খেলে বাড়ে যৌন শক্তি

এটি মলিবেডনাম এবং ম্যাঙ্গানিজ এর চমৎকার উৎস। ছোলাতে প্রচুর পরিমাণে ফলেট এবং খাদ্য আঁশ আছে সেই সঙ্গে আছে আমি কপার ফসফরাস আইরন এবং ট্রিপট্যোফান। জনশক্তি বাড়াতে এর ভূমিকা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। রাতে ছোলা ভিজিয়ে রেখে সকালে খালি পেটে প্রতিদিন খেলে যৌনশক্তি পারবে। শ্বাসনালীতে জমে থাকা পুরনো কাশি বা কম ভালো হওয়ার জন্য কাজ করে শুকনা ছোলা ভাজা।

ছোলার পুষ্টিগুণ

কাঁচা ছোলা অত্যন্ত পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে শর্করা প্রোটিন ক্যালসিয়াম ও খাদ্য শক্তি। পুষ্টি বিজ্ঞানীদের মতে ১০০ গ্রাম খাদ্যপ্রযোগী, ছোলায় যেসব পুষ্টি উপাদান রয়েছে তা হলো শর্করা ৫৯.৮ গ্রাম, প্রোটিন ২০.৪ গ্রাম, ক্যালসিয়াম 56 মিলিগ্রাম, স্নেহ ৫.৬০ গ্রাম, লহ ৯.১ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ৩৩.১ মিলিগ্রাম, ক্যারোটিন ১ ২৯ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি ১০. ৪৮ মিলিগ্রাম, ভিটামিন সি ১ মিলিগ্রাম, আঁশ ১.২ মিলিগ্রাম, জলীয় ৯. ৯ গ্রাম, খাদ্য শক্তি ৩৮৫ কিলোক্যালরি।
ক্যালসিয়ামের সাথে ফসফরাস ও ভিটামিন ডি মিলে রিকেট প্রতিরোধ করে। এদের অভাব শিশুদের ক্রিকেট বাহার ডেকে যায় এবং বয়স্কদের অস্টিওপোরেসিস বা অস্থিক হয়। গর্ভাবস্থায় এবং স্তন্যদানকারী মায়েদের ক্যালসিয়ামের চাহিদা অনেক বেশি যা ছোলা থেকে সহজে পাওয়া যায়।

আমার মতামত

আমরা সকলে জানি যে জিনিসের ভালো দিক আছে সেই জিনিসের আপার খারাপ দিক রয়েছে এটাই স্বাভাবিক। কেননা অতিরিক্ত কোন কিছু খেলে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।প্রিয় পাঠক আজকেরে আর্টিকেটির মাধ্যমে আজকে আমি আপনাদেরকে ছোলা খাওয়ার উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করেছি।

আপনাদের যদি কোন কিছু জানার থাকে সেটাও আমাকে মন্তব্যের মাধ্যমে জানাতে পারেন। আমি প্রতিনিয়ত আমার এই ওয়েবসাইটটিতে অনেক অথেন্টিক তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করে থাকি এইজন্য প্রতিদিন আমার ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন এবং আপনার ফ্রেন্ডের সঙ্গে শেয়ার করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url