কিভাবে দ্রুত চিকন হওয়া যায়
দ্রুত চিকন হতে হলে সর্বপ্রথম জানতে হবে মানুষ কি কারনে মোটা হয় এবং বেশিরভাগ
সময় এক্ষেত্রে দেখা যায় মানুষ তার খাদ্য অভ্যাস ও তার বংশগত কারণে বা বংশগত
বৈশিষ্ট্য এর জন্য বেশি দ্রুত মোটা হয়। এবং মানুষের বিভিন্ন ধরনের কার্য
অভ্যাসের কারণেও শরীরে মেদ বেড়ে যায়।
তাই চিকন হতে হলে কিভাবে মোটা থেকে রোগা হওয়া যায় সে বিষয়ে সঠিকভাবে নজর রেখে
দৈনন্দিন কাজকর্ম ও খাদ্য অভ্যাস গড়ে তুলতে হয়। এবং বিভিন্ন শারীরিক ব্যায়াম ও
নির্দিষ্ট নির্দেশনা অনুসরণ করে চলতে হয়।
চিকন হওয়ার খাদ্য তালিকা
চিকন হওয়ার জন্য খাবারে তালিকা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আসলে নিজেকে স্লিম
বা চিকন করতে হলে খাদ্য তালিকাটাও স্মার্ট হতে হবে যেন তা একদিকে শরীরে প্রয়োজন
মেটায় এবং অন্যদিকে শরীরকে চিকন রাখে বা শরীরকে চিকন করতে সাহায্য করে। চিকন হতে
হলে মনে রাখতে হবে খাবার তালিকা যেন চর্বি জাতীয় খাবার বেশি রাখা না হয়। কারণ
চর্বি জাতীয় খাবার শরীরে মেদ বাড়ায়ে ও শরীরকে দ্রুত মোটা করে। তাছাড়া নিয়মিত
লেবু বা চিনি মুক্ত লেবু শরবত ও খাদ্য তালিকায় শসা সালাদ চিকন বা স্লিম করতে
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
১৫ দিনে ওজন কমানোর ১২ উপায়
ওজন কমানোর জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করতে হবে। পর্যাপ্ত পরিমান পানি পান
করলে শরীর আর্দ্র থাকে এতে আপনার পেট ভরা এবং ভাবও তৈরি হবে। খুদাও কম লাগবে এ
কারণে আপনি কম খাবেন ধীরে ধীরে ওজনও কমবে তাতে। দিনে অন্তত ১০ থেকে ১২ ক্লাস পানি
পান করুন। ওজন কমাতে ফ্রিজ রান্নাঘরে যেসব উচ্চমাত্রার ক্যালোরি সমৃদ্ধ খাবার
রয়েছে বা ফাস্টফুড রয়েছে সেগুলো সরান এর বদলে স্বাস্থ্যকর খাবার রাখুন। রাখুন
ফল ও সবজি।
স্বাস্থ্যকর খাবার সামনে থাকলে এইসব খাবার অভ্যাসও ধীরে ধীরে তৈরি হবে। ওজন কমাতে
চিনি বা মিষ্টি জাতীয় খাবার থেকে ১৫ দিন অন্তত তুলে থাকুন। পাশাপাশি শর্করা
জাতীয় খাবার কম খান। যেমন ভাত রুটি ইত্যাদি। এইসব খাবার কম খেলে ওজন দ্রুত কমবে।
ওজন কমাতে প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার তার খাদ্য তালিকায় রাখুন। এতে বেশি স্বাস্থ্যকর
হবে। প্রোটিন খাবার বাদ দিলে শরীরে এর বাজে প্রভাব পড়ে।
ডিম দুধ মুরগির মাংস ডাল খাদ্য তালিকায় রাখুন। তবে লাল মাংস গরু এবং খাসির মাংস
এড়িয়ে চলুন। ওজন কমাতে বেশি বেশি সবজি খান। সবজি খেলে ওজন কমে তাই খালাই বেশি
বেশি সবজি রাখুন। সবজির মধ্যে রয়েছে পুষ্টি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এগুলো শরীর
ভালো রাখতে সাহায্য করে। আপনার শরীরের জন্য কতটুকু ক্যালরি দরকার সে অনুযায়ী
ক্যালোরি সমৃদ্ধ খাবার খান। প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। ওজন কমাতে খাওয়ার
বাদ দেবেন না।
না খেয়ে ওজন কমানো যায় না। তাই কোন বেলার খাবারকে বাদ দেওয়া যাবে না। দিনে
অন্তত ছয়বার খান দিন তিন বেলা বড় খাবার এবং তিন বেলা ছোট খাবার এভাবে খাবার কে
ভাগ করুন একেবারে খুব বেশি না খেয়ে অল্প পরিমাণে খাবার খান। ওজন কমাতে
প্রক্রিয়াজাত খাবার ফাস্টফুড কমল পানীয় সোডা এই খাবারগুলো একেবারে না বলুন।
এগুলোর মধ্যে উচ্চ পরিমাণ ক্যালরি থাকে এতে ওজন বাড়ে।
ওজন কমাতে আয়নার সামনে বসে খান শুনতে হয়তো অদ্ভুত লাগছে তবে গবেষণায় বলা হয়
যেসব লোক আয়নার সামনে বসে খায় তাদের ওজন দ্রুত কমে। ওজন কমাতে হাটার কোন বিকল্প
নেই। আর হাঁটা তো কেবল ওজন কমাবে না হৃদরোগের ঝুঁকিও। ওজন কমাতে আগে যেখানে আপনি
তিনটি রুটি খেতেন সেখানে একটি রুটি খান। বা যেখানে একতলা ভাত খেতেন সেখানে এক কাপ
ভাত খান। এর বদলে পেট ভরুন সবজি আর ফাল দিয়ে।
ঘরোয়া পদ্ধতিতে চিকন হওয়ার উপায়
আমাদের যাদের অতিরিক্ত ওজন তাদের অনেক রকম সমস্যা হয়ে থাকে। ওজনের কারণে অনেক
সময় অনেক বিপদের মুখে পড়তে হয়। আমাদের যে কোন কাজ করতে অসুবিধা হয়ে যায়।
আপনি চাইলে এখন ঘরে বসেই আপনার নিজের ওজন কমাতে পারবেন। যাদের ওজন বেশি ওজন কমাতে
চান তাদের জন্য বলি ওজন কমানোর সবথেকে সহজ উপায়। ০০.১৯ লিকুইড ক্যালোরি কমিয়ে
দেওয়া। ০১.৩৮ খাবার আগে পানি খাওয়া।
০২.৫১ ফাইবার যুক্ত খাবার খাবেন।০৫.৩৫ প্রক্রিয়াজাত খাবার পরিহার করা। ০৭.১৫
ফালমূল ও শাকসবজি পরিমিত পরিমাণে স্বাস্থ্যকর তেল স্বাস্থ্যকর নাস্তা নির্বাচন
করা। ১২.২৪ নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে। এ বিষয়গুলো যে মেনে চলতে পারবে তার খুব
সহজে ওজন কমে যাবে। আপনি যদি ঠিক মত ব্যায়াম আর ওজন কমানোর নিয়ম গুলো মেনে চলতে
পারেন তাহলে খুব সহজে আপনার ওজন কমে যাবে। ঘরোয়া ভাবে আপনি চাইলে ওজন কমাতে
পারেন।
মেয়েদের চিকন হওয়ার সহজ উপায়
অতিরিক্ত ওজন একটা বাড়তে ঝামেলা আমাদের থাকে। গবেষণা করে দেখা হয়েছে যে
শারীরিকভাবে ফিট থাকা মেয়েদের তুলনায় অতিরিক্ত ওজন যেসব মেয়েদের থাকে তাদের
অসুস্থ হওয়া ঝুঁকি থাকে অনেক বেশি। যাদের অতিরিক্ত বেশি ওজন হয়ে থাকে তাদের
শারীরিক মানসিক ও হরমোন জনিত বিভিন্ন ধরনের আরও সমস্যা হতে থাকে। যেসব মেয়েদের
ওজন বেশি তাদের কয়েকটি ওজন কমানোর উপায় রয়েছে।
নির্দিষ্ট পরিমাণে ঘুম, পরিমতি খাবার খাওয়া দাওয়া করা, হাসিখুশি থাকা, শরীরের
যত্ন নিতে হবে তার সাথে ব্যায়াম করতে হবে। ওজন কমাতে পুষ্টি আর ব্যায়াম দুই
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কোন মেয়ের যদি শরীরে ধরন এবং ফিটনেস টার্গেটের
ওপর নির্ভর করে তার জন্য ব্যায়াম। অন্যদের চেয়ে বেশি কার্যকর হয়ে যায়। আপনি
যদি সব দিকে সুবিধা নিতে চান তাহলে আপনাকে বিভিন্ন ধরনের ব্যায়াম করা পরামর্শ
দিব। ওজন কমানোর কিছু পদ্ধতি হচ্ছে হাটা, জগিং বা দৌড়ানো, সাইকেল চালানো,
মহিলাদের জন্য ওয়েট ট্রেনিং এবং সার্কিট ট্রেনিং করতে হবে।
ওজন কমাতে যেসব ফল খাবেন
ওজন কমাতে বিভিন্ন খাবারের পাশাপাশি ফল রাখতে পারেন। তবে সব ফল খাওয়া যাবেনা।
বেছে বেছে কিছু ফল খেতে হবে তাহলে আপনি নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবেন। মেদ
কমাতে যেসব ফল গুলো খাবেন আপেল স্ট্রবেরি কমলালেবু কলা পেয়ারা। আপেল লোক্যালোরি
ও উৎসব ফাইবা যুক্ত এই ফল। মাঝারি মাপের একটি আপেল থেকে ১১৬ ক্যালরি ও ৪.৪ গ্রাম
ফাইবার পাওয়া যায়।
প্রতিদিন ডায়েটে সাধারণত যে পরিমাণে ফাইবার প্রয়োজন তার পাঁচ ভাগের এক ভাগের
যোগান দেয় আপেল। ওজন কমাতে স্ট্রবেরি বেশ কার্যকর। মাত্র ১৫০ গ্রাম স্ট্রবেরি
থেকে পাওয়া যায় ৫০ ক্যালরি। এই ফাল রক্তচাপ কমানো বেশ কার্যকর। কমলালেবুর
সাইটিক অ্যাসিড শরীরের অতিরিক্ত ফ্যাট কমাতে সাহায্য করে। একটা ছোট কমলালেবু থেকে
৪৫ ক্যালোরি পাওয়া যায়। তবে ফলের রস খাওয়ার চেয়ে পুরো একটি কমলা লেবু চিবিয়ে
খাওয়ার চেষ্টা করুন।
আরো পড়ুনঃ যে পাঁচ খাবার নিয়ন্ত্রণে রাখবে ডায়াবেটিস
এতে বেশি উপকার পাবেন। কলা ডায়াবেটিসের ভয় না থাকলে কলা খেতে পারেন।
পুষ্টিগুনের জন্য এই ফলকে ডায়েটে রাখা উচিত। একটি কলায় থাকে ১০৫ ক্যালোরি। এটি
হজম প্রক্রিয়াকে ঠিক রাখে। কলার ডায়াটেরি ফাইবার ওজন বৃদ্ধি কমাতে বিশেষ
সাহায্য করে। একটি পেয়ারায় মাঝারি মাপের ৩৫ ক্যালোরি থাকে। এই ফল থেকে একটুও
কোলেস্টেরল পাওয়া যায় না। তাই ওজন কমাতে এ ফলের ওপর আস্থা রাখেন পুষ্টিবিদরা।
ওজন কমানোর জন্য ব্যায়াম
শরীর মোটা থেকে চিকন করতে ব্যায়াম অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। এক্ষেত্রে কেউ
জিমে গিয়ে ব্যায়াম করতে পারে আবার চাইলে ঘরে বসে বিভিন্ন ধরনের ব্যায়াম করতে
পারে। বিশেষ করে চিকন হওয়ার জন্য জগিং একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যয়াম যা শরীরের
চর্বি কমাতে সাহায্য করে।এবং জোরে জোরে হাটা ও সাঁতার কাটার চিকন হওয়ার জন্য খুব
ভালো একটি ব্যায়াম। প্রতিদিন চেষ্টা করুন এক ঘন্টার বেশি সময় ব্যায়াম করার।
আপনি সঠিক নিয়মে ব্যায়াম করতে পারলে ওজন অবশ্যই কমবে।
আমার মতামত
আজকে আমি চেষ্টা করেছি চিকন হওয়ার উপায় গুলো নিয়ে আলোচনা করার। আমি মনে করি
চিকন হওয়ার জন্য সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে ব্যায়াম। আপনি সঠিকভাবে
নিয়মিত ব্যায়াম করলে চিকন হতে পারবেন। ব্যায়ামের পাশাপাশি আপনাকে সবজি এবং
ক্যালোরি জাতীয় খাবার খেতে হবে। ওজন কমাতে আপনাকে অবশ্যই খাদ্য তালিকা করতে হবে
এবং খাদ্য তালিকা অনুযায়ী খেতে হবে।
প্রিয় গ্রাহক আমার আর্টিকেলটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনারা
আপনার সুন্দর মন্তব্য দিয়ে কমেন্ট বক্সে জানাবেন। এবং আপনাদের কি বিষয়ে জানার
ইচ্ছা আছে তা অবশ্যই আমাকে কমেন্ট বক্সে বলে যাবেন। এবং আমার ওয়েবসাইটটি ভিজিট
করবেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url